আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের মার্কিন দূতাবাসে অবস্থান করা অনাবশ্যকীয় কর্মীদের দূতাবাস ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সুদীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান ত্যাগ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ঘোষণার দুই সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কর্মীদের প্রতি এমন নির্দেশনা দিল। আফগানিস্তানে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫শ সৈন্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনারা ইতোমধ্যে সরঞ্জাম হস্তান্তরের কাজ শুরু করেছে ।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, এক ভ্রমণ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের কাবুল দূতাবাসের যেসব সরকারি কর্মীদের অন্যত্র থেকে কাজ সম্পন্ন করা যাবে তাদেরকে আফগানিস্তান ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত রোজ উইলসান জানিয়েছেন, কাবুলে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং হুমকির ঝুঁকি থাকায় পররাষ্ট্র দপ্তর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নির্দেশনা স্বল্প সংখ্যক কর্মীকে প্রভাবিত করবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ চলছে।
এদিকে, আফগানিস্তানে নিযুক্ত ওয়াশিংটনের বিশেষ দূত জালমাই খালিজাদ মার্কিন সিনেটে এক শুনানিতে বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর তালেবান যদি ক্ষমতা দখল করে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে সহায়তা বন্ধ করে দিবে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল ম্যাকেনজি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে দূতাবাসের কার্যক্রম কার্যকর রাখবে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে দূতাবাস চালু রাখার পরিকল্পনা আছে। সেখানে আমাদের খুব সামান্য সংখ্যক সেনা উপস্থিতি থাকবে। কারণ, দূতাবাস রক্ষার জন্য এটা খুব প্রয়োজন
মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির শুনানিতে জালমাই খালিজাদ যিনি গত কয়েক বছর ধরে তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি তত্ত্বাবধায়ন করেছেন তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে শত মিলিয়ন ডলার সহায়তা তাদের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবহার করতে পারে; আফগানিস্তানকে মানবাধিকার বিশেষ করে নারীদের ওপর সম্মান দেখাতে চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
শুনানিতে সিনেট প্যানেলকে তিনি বলেন, তালেবান বলেছে তারা জাতিচ্যুত হতে আগ্রহী নয়। আমরা বলেছি, তারা (তালেবান) যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা, জাতিচ্যুত খেতাব শেষ করতে চাইলে সেটা নির্ভর করবে নিজেদের নাগরিকদের প্রতি তারা কেমন ব্যবহার করে তার ওপর।
জালমাই খালিজাদ আরও বলেন, তালেবান যদি সরকারের কাছ থেকে সামরিকভাবে ক্ষমতা দখল করে নেয় তাহলে তাদের প্রতি খুব কম আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকবে। তারা বিচ্ছিন্নতা, আঞ্চলিক বিরোধীতা, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং সমালোচনার মুখোমুখী হবে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে তালেবান কর্তৃক ক্ষমতা গ্রহণের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ঐকমত্য রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।