বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় দিনের পর দিন ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলছে। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে সংকট দেখা দিয়েছে স্যালাইনের। এই সুযোগে ওষুধের দোকান গুলো নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে স্যালাইন। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। প্রতিদিন গড়ে পাঞ্চাশজনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে জানিয়েছে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন কিংবা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ডায়রিয়া প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কোন প্রচার-প্রচারণা নেই উপজেলায়। এমনকি উপজেলার কোথাও ডায়রিয়ায় কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন কী না সে তথ্যও কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি পূর্ণিমায় ভরা কটালে স্থানীয় নদ-নদীতেও লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে। গ্রামের মানুষ রান্নাসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে ওই পানি ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অনেক রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে বাড়িতে বসেই স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কালাইয়া বন্দরের গ্রাম্য ডাক্তার লতিফুর রহমান জানান, ডাায়রিয়ার ধরণ অনুযায়ী প্রতি রোগীকে মোটামুটি সুস্থ হতে কমপক্ষে ১০ থেকে ৪০টি স্যালাই শরীরে প্রয়োগ করতে হচ্ছে।
রোগীদের স্বজন ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও বিভিন্ন কোম্পানির প্রতি প্যাকেট স্যালাইন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়, এখন সেই স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।
স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে স্যালাইন সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে বাউফলে ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালসহ উপজেলায় বিভিন্ন ওষুধের দোকানে স্যালাইন সংকট দেখা দেওয়ায় সংকট সমাধানে স্থানীয় সাংসদ সাবেক চিফ হুইপ আসম ফিরোজ স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, মূলত: প্রচণ্ড তাপদহ এবং নদীর পানিতে লবণাক্ততার কারণে ডায়রিয়ার সক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে স্যালাইন সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছি। তবে ডায়রিয়া থেকে রেহাই পেতে হলে ব্যক্তিগত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি জোর দিতে হবে। পানি ফুটিয়ে ব্যবহার করাসহ খোলা ও বাসি খবার খাওয়া যাবে না।’
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম সুপন বলেন, স্যালাইন সংকট খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।